অ্যান্টিভাইরাসের কাজ হলো কম্পিউটারকে ভাইরাসমুক্ত কিংবা দুর্বৃত্তদের নজরদারি থেকে রক্ষা করা। কিন্তু অ্যান্টিভাইরাসই যদি দুর্বৃত্তদের সাহায্য করে? সম্প্রতি জনপ্রিয় অ্যান্টিভাইরাস সিমানটেকের ওপর উঠছে সেই অভিযোগ।
মার্কিন এই নিরাপত্তা সফটওয়্যারটি নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট) জনগণের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করেছে। বলা হচ্ছে, সিমানটেকে অনেক বেশি নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি রয়েছে। তাই এটি ব্যবহার করে কম্পিউটারে ঢুকতে পারে হ্যাকাররা। বর্তমানে এই অ্যান্টিভাইরাস বিভিন্ন সরকারি, করপোরেট ও ব্যক্তিগত কম্পিউটারে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাটির সতর্কবার্তায় বলা হয়, সিমানটেক ও নরটন ব্র্যান্ডের অ্যান্টিভাইরাস পণ্য হ্যাকারদের হাতে কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে পারে।
বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম জনপ্রিয় অ্যান্টিম্যালওয়্যার সফটওয়্যার সিমানটেক। বিশ্বজুড়ে অসংখ্য কম্পিউটারে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে অ্যান্টিভাইরাসে নিরাপত্তাত্রুটি খুঁজে পাওয়ার ঘটনাটি সিমানটেকের জন্য বিব্রতকর।
গুগলের ‘প্রজেক্ট জিরো’ নিরাপত্তা দলের বিশেষজ্ঞ টাভিস অরম্যান্ডি সিমানটেকের এই নিরাপত্তাত্রুটি খুঁজে বের করেন। গত সপ্তাহে এক ব্লগ পোস্টে তিনি এই তথ্য জানান। অরম্যান্ডি বলেন, হ্যাকাররা সহজেই এই ত্রুটি কাজে লাগিয়ে পুরো ব্যবস্থার ওপর দখল নিতে পারে।

গত এপ্রিল মাসেই অরম্যান্ডি সিমানটেককে এই ত্রুটির বিষয়ে জানান। গত সপ্তাহে সিমানটেক ওই ত্রুটি দূর করতে সফটওয়্যার হালনাগাদ করে।

সিমানটেকের নিরাপত্তা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম ব্রমউইচ বলেন, নিরাপত্তাত্রুটি সারাতে কাজ করা হয়েছে এবং এখন হালনাগাদ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সরকারি কার্যালয় বা সিমানটেকের গ্রাহক প্রতিষ্ঠানগুলো কত দিনে তাদের সফটওয়্যার হালনাগাদ করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে সাইবার নিরাপত্তা সফটওয়্যারগুলোর ত্রুটির বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা বলে আসছেন। গবেষকেরা জনপ্রিয় কম্পিউটার সফটওয়্যারের ত্রুটি বের করে মনোযোগ আকর্ষণ করলেও নিরাপত্তা সফটওয়্যার শক্তিশালী করতে কম সময় দেন। সিমানটেকও এর ব্যতিক্রম নয়।

ম্যাসাচুসেটসের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জ্যাক ড্যানিয়েল বলেন, তাদের নিরাপত্তা সফটওয়্যার ইনস্টল করা মানে নিজেকে আরও অনিরাপদ করে তোলা। এটা বিদ্রূপাত্মক।

সিমানটেক বলেছে, কারও কম্পিউটারে ঢুকতে তাদের সফটওয়্যারের নিরাপত্তাত্রুটি এখনো কাজে লাগাতে পারেনি হ্যাকাররা। কিন্তু কম্পিউটারের এই দুনিয়ায় এ কথার মানে হচ্ছে, এখন পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। তথ্যসূত্র: সিএনএন।
 
Top