কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো আপনার আন্ড্রয়েড স্মার্টফোন এর ব্যাটারী কে খুব তাড়াতাড়ি শেষ করে দিচ্ছে। আর এই সব বিষয় গুলো শুধুমাত্র একধরনের ডিভাইসেই না বরং সব ডিভাইসের জন্য একই রকম। যদি আপনি কখনো আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারী জনিত অপুষ্টিতে ভোগেন, তাহলে এখনি বসে পড়ুন এবং লক্ষ করুন আমাদের দিকে এবং দেখুন কি হচ্ছে এখানে।
ডিসপ্লে উজ্জলতা (Display Brightness): বিস্মিত হবার কিছু নেই আপনার প্রিয় ডিভাইসের ডিসপ্লেটি কিন্তু ব্যাটারী ধংস করার ক্ষেত্রে প্রথম স্তরের খাদক। এর প্রধান কারন হচ্ছে ডিসপ্লের উজ্জলতা বাড়িয়ে ব্যাবহার করা। অটো ব্রাইটনেস প্রোগ্রামটিও একই কাজ করে। এর সহজ সমাধান হলো যতটা সম্ভব ব্রাইটনেস কম ব্যাবহার করা যেভাবে আপনি স্বাচ্ছন্দ অনুভব করেন, যখন দরকার হবে তখন প্রয়োজন মত আবার বাড়িয়ে নিবেন। যদি আপনি এইভাবে আপনার ডিভাইসটিকে ব্যাবহার করেন তাহলে আপনার জন্য রয়েছে অপার বিস্ময় অন্তত ব্যাটারীর দিক থেকে।
লোকেশন (Location): আপনি যদি কুরিয়ার সার্ভিস বা পিজা ডেলিভারির লোক হন তাহলে আপনার সাথে কোন কথা নেই। আর যদি না হন তাহলে একটু বসুন না কথা বলি। সম্ভবত আমাদের স্মার্টফোনে দিন রাত ২৪ ঘন্টা GPS চালু রাখার কোন দরকার হয়না। GPS চালু রাখলে আপনার ফোনের ব্যাটারী রসিকতা শুরু করবে। তাই বলে যে GPS ব্যাবহার করবেন না তা কিন্তু বলছি না। যখন দরকার হবে তখন ব্যাবহার করে আবার অফ করে রাখবেন। তাহলেই বুঝতে পারবেন বিডি-ড্রয়েড আপনাকে নিয়ে কত ভাবে। ডিসপ্লে টাইম-আউট (Display time out): ডিসপ্লে টাইম-আউট হচ্ছে একটা বিশেষ ধরনে অপশন যেখানে আপনি নির্ধারন করতে পারবেন যে আপনার ফোন আপনাকে ছাড়া কতক্ষন জেগে থাকবে। অর্থাৎ আপনার ফোন কখন স্লিপ মোডে যাবে যখন আপনি নেভিগেশন বন্ধ করবেন। আপনি যদি বেশি টাইম নিয়ে থাকেন তাহলে এটি আপনার ফোনের ব্যাটারীকে খুব তাড়াতাড়ি ডিসচার্জ করে দেবে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি ১৫ সেকেন্ড বা ৩০ সেকেন্ড ব্যাবহার করেন।

অ্যাকাউন্ট সংযোজন (Account suncing): যখন আপনার ফোন গুগল অ্যাকাউন্ট এর সাথে সংযোজিত থাকবে তখন প্লে স্টোরের সাথে একটা লিঙ্ক তৈরী হয়ে যায়। এর একটা প্রধান কাজ হচ্ছে আপনার ডাউনলোডকৃত অ্যাপস গুলোর আপডেট করা। এক্ষেত্রে আপনি যদি অটো আপডেট বন্ধ করে রাখেন এবং ম্যানুয়াল আপডেট চালু রাখেন তাহলে আপনি যখন তখন ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি থেকে রক্ষা পাবেন। আর তার সাথে ফ্রী পাবেন আপনার অতি কাঙ্খিত ব্যাটারী লাইফ।

ওয়াই-ফাই সিটিং(Wi-fi connectivity): যেহেতু আপনার হাতে স্মার্টফোন। সুতরাং ওয়াই-ফাই পেলে তো আর নিজেকে সংবরন করতে পারবে না। আমি আপনাকে সংবরন করতেও বলব না। তবে শুধু এটুকুই বলব যে আপনার কাজ হয়ে গেলে সাথে সাথেই ওয়াই-ফাই অফ করে নিবেন। এবং যতটা সম্ভব দুর্বল কানেকশন ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। চাইলে আপনি আপনার ফোনের ওয়াই-ফাই সেটিং থেকে দুর্বল কানেকশন এড়িয়ে থাকতে পারবেন। এন

এফ সি, জেসচার, প্রোফাইল(NFC, Gestures, profile): যদিও আমি এন এফ সি খুব পছন্দ করি কিন্তু সত্যি বলতে কি এটা ব্যাবহার করা খুব জটিল। তাই বলব যদি আপনার এই অপশনটি খুব বেশি দরকার না হয় তাহলে ব্যাবহার করবেন না। এবং সবসময় চেষ্টা করবেন প্রোফাইল থেকে পাওয়ার সেভিং মোড ব্যাবহার করতে। পাওয়ার সেভিং মোড অটোমেটিক্যালি হ্যান্ডেল করবে আপনার ব্যাটারী যত্ন। তবে কেনো এটা ব্যাবহার করবো ?
পুরনো এবং অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস(Old and unused apps): আমি যখন প্রথম অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যাবহার করি তখন আমার ফোনে প্রায় ২০০ টি অ্যাপস ছিল যার বেশির ভাগ হয়তো ১ মাসেও ওপেন করতাম না। যার ফলে ফোনের ব্যাটারী আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে শুরু করলো। তাই আপনাকে বলছি যতটা সম্ভব শুধু মাত্র দরকারী অ্যাপস ছাড়া বাকিদেরকে গুডবাই জানান আপনার ফোন থেকে। আর একটি কথা বলতে প্রায় ভুলেই গেছি আপনার ব্যাবহৃত অ্যাপস গুলোর যখন কোন আপডেট ভার্সন আসবে তখনি পারলে আপডেট করে নিবেন। কারন ডেভেলপারদের মাথায় সবসময় একটা চিন্তা ঘুরঘুর করে তা হল কিভাবে ব্যাটারী কম নিয়ে কাজ করা যায়। তাই আপডেট ভার্সন সবসময় স্বাগতম। ব্যাটারী সংক্রান্ত অনেক কথা বললাম। আশা করি স্মার্টফোনের আনন্দ আপনারা আরো বেশি করে উপভোগ করতে পারবেন। আমাদের পরামর্শ যদি কোনভাবে আপনাদের কাজে লাগে তাহলে আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
 
Top