Latest News

বসন্ত এসেছে, ওমনিই আপনার বাগান মৌমাছিতে ছেয়ে গেছে। বিস্ময় নিয়ে ভাবছেন, ‘শীতকালে এরা যায় কই’! গবেষণা ও তথ্য বলছে, যুক্তরাজ্যেরই প্রায় ২৫০ প্রজাতির মৌমাছি শীতের সময়ে দক্ষিণাঞ্চলে আসে না। শীতের দিনে মৌমাছি দেখতে না পাওয়ার এটা একটা বড় কারণ।
মৌমাছি (এপিস মেলিফেরা) খানিকটা ঘরকুনো প্রজাতি। যারা ৬০,০০০ শ্রমিক একসঙ্গে মিলে বৃহৎ উপনিবেশ গড়ে তোলে। যদিও কৃত্তিমভাবে খামার মালিকদের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে মৌমাছির চাষ ও ব্যবহার হচ্ছে। তারপরও তারা গাছের গহ্বরে বন্য পরিবেশে দল গঠন করতেই বেশি ভালোবাসে।

শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে মৌমাছি প্রাকৃতিক উপায়ে পরিবেশ থেকেই তাপ সংগ্রহ করে। বছরের বেশিরভাগ সময় মৌপোকারা এভাবেই ঠিকে থাকে। তবে শীতের সময়ে তারা নিয়ম বদলায়। এসময় মৌমাছির দলগুলো সম্মিলিতভাবে কাজ করে। দলবব্ধ থেকে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। শীতের দিনে মৌমাছির ফ্লাইট পেশী প্রয়োজনীয় তাপ উৎপন্ন করে শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখে।
গ্রীষ্মের সময় প্রতিটি কর্মী মৌমাছি ১-২ মাস বাঁচে। যেসব মৌমাছি ডিম দেয়, তাদের আয়ু বেশি, প্রায় ৬ মাস। ব্যতিক্রম শুধু শীতকাল, এ সময় মৌমাছিরা দলবদ্ধ হয়ে বঁচার চেষ্টা করে বলে বাচ্চা উৎপাদন করে না।


তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে থাকলে মৌমাছিরা চাকে থাকে। তখন এরা শুধু উষ্ণ দিনে বের হয়। বর্জ্য নিষ্কাশন ও খাবার সংগ্রহ করে আবার চাকে ফেরে। তাতে আবাসস্থল পরিচ্ছন্ন থাকে।
শীতে মৌমাছির সংখ্যা অনেক কম থাকে। এ সময় আগে থেকে সঞ্চয় করে রাখা মধু ব্যবহার করেই এরা বেঁচে থাকে। সঞ্চিত খাবারের অভাব হলে মৌমাছিরা মরেও যেতে পারে। এরা শীতকালে চাকের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে থাকে। মধু সঞ্চয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠে আসে।
মৌমাছি ছোট হলেও যুক্তরাজ্যের (বছরে 400 মিলিয়নেরও বেশি) অর্থনীতিতে এরা বিরাট অবদান রাখছে। যুক্তরায্যে আপেল, মটরশুটিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফসলের ফলন মৌমাছির উপর নির্ভরশীল। কৃষির জন্য মৌমাছি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। গবেষণা ও তথ্য বলছে, ফসল ফলানোর জন্য বিভিন্ন প্রজাতির মৌমাছি আছে। পাশাপাশি মৌমাছির জীবনাচারণ ও আবাস অনেক বৈচিত্র্যময়!
পার্ক-বাগানের মত শহুরে আবাসস্থলেও ইদানিং প্রচুর মৌমাছির দেখা মেলে। সেই সঙ্গে হারাচ্ছে, তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল। কৃষিবন্ধু মৌমাছির বিচরণ ধরে রাখতে হলে ফুলের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
লেখকঃ নাজিয়া আক্তার,
আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
 
Top