যারা অনলাইন গেমিং সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা নিশ্চয়ই টিআই-৪ নিয়ে খুবই উত্তেজিত! যারা এখনো জানেন না তাদের বলছি, টিআই হল অনলাইনভিত্তিক ডোটা-২ খেলার সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট। এবার এর ৪র্থ আসরের পর্দা নামতে যাচ্ছে। মাল্টিপ্লেয়ার মুডের এই খেলার অন্যতম আকর্ষণ টুর্নামেন্টের লোভনীয় টাকার প্রাইজমানি। প্রতিবছরই, প্রাইজমানির টাকার অংক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিপুল প্রাইজমানির উৎসঃ
৩য় আসরে, ভাল্ভ ক্রাউডসোর্সিং এর মাধ্যমে প্রাইজমানির টাকা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। এজন্য কনপেন্ডাম নামে তারা একটি কোম্পানি গঠন করে যার মাধ্যমে ডিজিট্যালি তারা ফান্ড সংগ্রহ করেছিল। সেসময় তারা ২.৮মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছিল। ৪র্থবারে তাদের লক্ষ্য ১০,৪৫০,০৪৩ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা।
অনেক ই-গেম সমর্থক দ্বিতীয় কোন চিন্তা না করেই ১০ডলারের কনপেন্ডাম কুপন কিনবেন। এই মুহূর্তে পৃথিবীতে প্রায় ৮,৭৯০,৬২২ জন নিবন্ধিত ই-গেমার আছেন। এদের প্রায় অর্ধেকই এই বিশাল তহবিল গঠন করতে এগিয়ে এসেছে। যার কারনে আয়োজকদের জন্য প্রতিবছর পুরষ্কারের মুল্য বাড়াতে খুব সমস্যা হচ্ছে না। তবে সবাই না, যারা স্পন্সরড তারাই কেবল টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে।

দর্শকদের সাড়াঃ
যতই টাকার ঝনঝনানি থাকুক, দর্শকদের সাড়া না পেলে ই-গেম এতদূর এগোতে পারতো না। টুর্নামেন্টে টিকেটের দাম ধরা হয়েছে ৯৯ থেকে ১৯৯ মার্কিন ডলারের মধ্যে। তবে ভিআইপি টিকেটের দাম ৪৯৯ডলার। ভিআইপি টিকেটধারীরা টুর্নামেন্টজুড়ে খেলোয়াড়দের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন। ভাল্ভ জানিয়েছে, টিকেট ছাড়ার ১ ঘন্টাতেই ১০ হাজার টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। যারা এখনো টিকেট পাননি, ই’বে থেকে ৫০০ ডলারের বিনিময়ে টিকেট সংগ্রহ করতে পারেন। টিকেটের দাম শুনে নিরাশ হবার কিছু নেই, ‘টুইচ’ সহ আরও অন্যান্য অনলাইন স্ট্রিমিং সাইটে লাইভ খেলা দেখতে পারবেন আপনি। প্রাইজমানির মতই ই-গেমিং এ দর্শকের সংখ্যাও হুহু করে বেড়ে চলেছে।
বিপুল অর্থের হাতছানিঃ
টিআই তে প্রথম দুটি দলের জন্য বরাদ্দ থাকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভাল্ভ গতবছর বিজয়ীকে পুরষ্কার হিসেবে দিয়েছে ১৪,৩৭,১৯০ মার্কিন ডলার। মালয়শিয়ান অরেঞ্জ টিম ২০১২ সালের আসরে জিতেছিল ২৫০০০ মার্কিন ডলার, আর ২০১৩ সালে ৩য় হয়ে ঘরে তুলেছিল ২,৮৭,৪৩৮ মার্কিন ডলার! বলা হচ্ছে, ২০১৪ সালে প্রাইজমানির পরিমান ২০১৩ থেকে প্রায় ৪৬গুন বেশী হতে যাচ্ছে !
নতুন ধরনের ক্যারিয়ারঃ
ডোটা-২, লিগ অব লেজেন্ডস সহ বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক গেমের কারনে অনেক তরুণই ভাবছেন  অনলাইনে গেম খেলাকে পেশা হিসেবে নিতে। স্বাভাবিকভাবেই, গেম খেলার উচ্ছ্বাসের পাশে এইখেলায় বিপুল অর্থের হাতছানিই তাদের আকৃষ্ট করছে।.প্রথমদিকে বোঝা না গেলেও, দিনদিন ই-গেমিংকে পেশা হিসেবে নেবার বিষয়টি স্বাভাবিকই হয়ে উঠছে। অন্যান্য খেলার তুলনায়, এখেলাকে পেশা হিসেবে নেবার অনেকগুলো কারন আছে বটে। হেরে গেলেও, একদম খালিহাতে আপনি ফিরে যাবেন না। এটা সাধারনত অন্যান্য খেলায় দেখা যায়না। তারপরেও, যারা ভিডিও গেম খেলেন তারা এইনিয়ে কিছুটা দ্বিধায় ভুগেন। অন্য খেলার মত সারাজীবন প্র্যাকটিসই করে যান,নিজে সাহস করে মাথে নেমে যাবার সুযোগটা খুজে দেখেন না। প্রাপ্তি বা ঝুকি হিসাব ভুলে, হয়ত অন্যান্য খেলার মতই দ্রুতই অনলাইন গেমিংএর প্রসার ঘটবে।
 
Top