সবচেয়ে সহজলভ্য তুলনামূলক সস্তা ফল কলা। সমাজের সর্বস্তরের লোকদের মধ্যে কলা সব ঋৃতুর জনপ্রিয় একটি ফল। কলায় আছে পুষ্টিগুন এবং রোগ নিরাময় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ‘প্রায় সব বয়সের সবার জন্য কলা একটি প্রথম পছন্দের উপকারী খাবার। মজার ব্যাপারটা হলো, অনেকেই কল্পনাও করতে পারে না কী ভীষণ উপকারী ফল এই কলা।
ডাক্তার ও পুষ্টিবিদরা বলেন, প্রতিদিন অন্তত একটি হলেও কলা খাওয়া উচিত যে কোনো সুস্থ মানুষের। কিন্তু কেন? কলায় থাকে তিনটি প্রাকৃতিক চিনি সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ। যা শরীরকে যোগান দেয় তাৎক্ষণিক শক্তি। দিনের শুরুতে একটি কলা হতে পারে সারাদিনের বন্ধু। কলায় থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক প্রোটিন। যা শরীরে গিয়ে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত হয়। সেরোটোনিন মনকে রিলাক্স করে। মুড ভালো হয়ে উঠতে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন বি স্নায়ু সচল করে মানসিক চাপ কমিয়ে কর্মক্ষম করে তোলে। দীর্ঘ কর্ম দিবসে বা পরীক্ষার সময় কলা হতে পারে অত্যন্ত উপকারী খাদ্য।
কলা পটাশিয়ামের অত্যন্ত চমৎকার একটি উৎস। একটি মাঝারি আকৃতির কলায় পটাশিয়াম থাকে প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম। এই উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম ও স্বল্প মাত্রার সোডিয়াম ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে। হার্ডঅ্যাটাক ও হটাৎ স্ট্রোকের প্রবণতা প্রতিরোধ করে। মানসিক অবসাদ থাকলে রক্তে দ্রুত পটাশিয়াম লেভেল হ্রাস পায়। কলা পটাশিয়ামের মাত্রা ড্রাগ ছাড়া স্বাভাবিক রেখে অবসাদ কমাতে সহায়তা করে। পটাশিয়াম মানবশরীরের হার্ডবিট ঠিক রাখে। অক্সিজেন মস্তিষ্কে নিয়মিত পৌঁছে দেয়। শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে। কলাতে রয়েছে প্রোটিয়েজ ইনহিবিটর যা পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া (হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি) নির্মূলে সহায়তা করে। এই ব্যাকটেরিয়া পাকস্থলীর আলসারের প্রাথমিক কারণ।
কলা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড। বুক-গলা জ্বালা পোড়া করলে কলা খাওয়া যেতে পারে, নিরাময় হবে। কলা পাকস্থলির অম্লতা কমাতে সাহায্য করে। কলায় বিদ্যমান বি-৬, বি-১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে। সুতরাং, ধূমপান ছেড়ে দেয়ার জন্য কলার জুড়ি নেই। কলায় থাকে প্রচুর আয়রন। রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে কলা সাহায্য করে। ফলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া দূর হয়। কলার উচ্চমাত্রার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই পেট পরিষ্কার রাখতে কলা জাদুর মতো কাজ করে।
 
Top