জীবিত মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে
বয়স্ক হলো গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর। আর এরা প্রজনন উপযোগী হয়ই দেড়শ’ বছর বয়সে।
রেডিও কার্বন ডেটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এই হাঙ্গরের
বয়স নির্ণয় করেছেন। তাতে একটি হাঙ্গরের বয়স পাওয়া গেছে চারশ’ বছর।
গবেষকরা
বলছেন, এসব হাঙ্গর বছরে ১ সেন্টিমিটার করে বৃদ্ধি পায়। সায়েন্স জার্নালের
সর্বশেষ ইস্যুতে বিজ্ঞানীরা জীবিত মেরুদণ্ডী প্রাণিদের এই তথ্য প্রকাশ
করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, এর আগে জীবিত মেরুদণ্ডী প্রাণিদের মধ্যে সবচেয়ে
বয়স্ক বলে জানা গিয়েছিল বাউহেড বা আর্কটিক তিমির কথা। এই প্রজাতির একটি
তিমির বয়স ছিল ২১১ বছর। সেই রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর।
রেডিও কার্বন ডেটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিজ্ঞানীরা বের করেছেন এমন ২৮টি
হাঙ্গরের বয়স। আর তাতে চারশ বছর বয়সী একটি মাদি হাঙ্গরের সন্ধান মিলেছে।
এই
গবেষণার প্রধান ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী
জুলিয়াস নিয়েলসেন বলেন, ”ধারণা করেছিলাম যে আমরা অস্বাভাবিক একটি প্রাণী
নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু আমার মনে হয়, এসব হাঙ্গরের যে বয়স বেরিয়ে এসেছে তাতে
এই ধরনের গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব গবেষকই চমকিত হবেন।” গবেষকরা জানান,
গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর বৃহদাকায় একটি প্রাণী। এরা ৫ মিটার বা ১৫ ফুটেরও বেশি
লম্বা হতে পারে। নর্থ আটলান্টিকের গভীরে ঠান্ডা পানিতে এদের দেখা মিলে
থাকে। এরা খুব ধীরে সাঁতরায়। এর আগেও বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন যে এরা বহু
বছর ধরে বেঁচে থাকে। তবে এবারের গবেষণার আগ পর্যন্ত এদের প্রকৃত বয়স জানা
যায়নি। কারণ এই হাঙ্গরের শরীরের প্রতিটি অংশই নরম, যা থেকে সঠিক বয়স বের
করা কঠিন। শেষ পর্যন্ত গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গরের চোখের লেন্স ব্যবহার করে
বিজ্ঞানীরা কাজটি করেছেন। এই পদ্ধতিতে একদম ঠিক ঠিক বয়স বের করা সম্ভব নয়।
বিজ্ঞানীরা তাই বলছেন, সবচেয়ে বয়স্ক হাঙ্গরের বয়স পাঁচশ’ বছরেরও বেশি হতে
পারে, আবার তিনশ’ বছরের মতোও হতে পারে। তবে সম্ভবত এর বয়স চারশ’ বছরই হবে।