ফেইসবুক লাইভের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস) থেকে সরাসরি দেখানো হচ্ছে ভিডিও, এমন এক ভিডিও লিংক নিয়ে সম্প্রতি উন্মাদনা ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে। দেখতে এরকমটা মনে হলেও, আসলে এই ভিডিও তেমন কিছুই ছিল না।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আইএসএস-এর বাইরে পৃথিবীর নীল কক্ষপথের ব্যাকগ্রাউন্ডে নভোচারীরা স্পেস সুট পরে কাজ করছেন। 'ইউনিল্যাড' নামের ফেইসবুক পেইজ থেকে দেওয়া ওই ভিডিও প্রায় ১৭ মিলিয়ন দর্শক দেখেছেন আর 'ভাইরাল ইউএসএ' নামের পেইজ থেকে সংখ্যাটা প্রায় ২৬ মিলিয়ন, জানিয়েছে বিবিসি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফেইসবুক ব্যবহারকারী এই ভিডিও দেখেন ও এতে লাইক, কমেন্ট দেন, কেউ কেউ আবার শেয়ারও করেন।
সবাই ভিডিওটি নিয়ে এত মাতোয়ারা হলেও, অধিকাংশরাই ঘেঁটে দেখেননি যে, নাসা বা আইএসএস-এর কেউই ফেইসবুক লাইভে এমন কোনো ভিডিও দেখানো নিয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি। আর নাসা বিবিসিকে নিশ্চিত করে জানায়, এটি আইএসএস-থেকে সরাসরি দেখানো কোনো ভিডিও নয়, বরং হয়তো এটি আগের কোনো মহাকাশযাত্রার ভিডিও ফুটেজ।
ভাইরাল ইউএসএ-তে দেখানো এই ভিডিও'র কিছু অংশ নভোচারী টেরি ভার্টস-এর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে করা মহাকাশযাত্রা থেকে নেওয়া। আর ইউনিল্যাড পেইজে দেখানো ভিডিও'র ফুটেজ নেওয়া হয় ২০১৩ সালে রুশ নভোচারীদের অভিযান থেকে নেওয়া।নাসা জানিয়েছে, মানুষ যখন মহাকাশ নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠে তখন মহাকাশ সংস্থাগুলোও "আনন্দিত" হয়। আর এই ভিডিও দেখতেও মানুষের আগ্রহের কমতি ছিল না তা তো ভিডিও'র দর্শক আর কমেন্ট করা ব্যবহারকারিদের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায়।
নাসা আরও জানায়, কেউ যদি মহাকাশ থেকে সরাসরি কোনো ভিডিও দেখতে চান, তবে তিনি নাসা বা আইএসএস-এর ফেইসবুক বা টুইটার পেইজে ঢুঁ মারতে পারেন। আর আইএসএস থেকে সত্যিকারের একটি সরাসরি ভিডিও দেখানো হয়, যা তাদের সাইটে পাওয়া যায়।
ইউনিল্যাড বিবিসি-কে জানিয়েছে, আইএসএস-এর একটি পুরানো ভিডিও সম্প্রচার করে তারা "ফেইসবুকের 'সরাসরি সম্প্রচার' ফিচার আসলেই কী করতে পারে তার সক্ষমতা পরীক্ষা করতে" এই পোস্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এ খবর প্রকাশের আগ পর্যন্ত ভাইরাল ইউএসএ-এর পক্ষ থেকে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।